গল্পের নাম: ছায়ার ছন্দ

Commenti · 34 Visualizzazioni

গল্পের নাম: ছায়ার ছন্দ
ধরন: ভৌতিক | মনস্তাত্ত্বিক | পুনর্জন্মের রহস্য
লেখক: [আব্দুর রহিম রায়হান]

 

 

 

---

 

ছায়ার ছন্দ

 

সন্ধ্যার আলো নিভে যাওয়ার আগে নিশাতের বাড়িতে ছিল কেবল হাসি আর কেকের গন্ধ। বন্ধুবান্ধব আর পরিবারের ভালোবাসার মাঝে নিজের জন্মদিনটা যেন রূপকথার মতোই লাগছিল। কেক কাটার সময় যখন নিশাত মোমবাতিগুলো নিভিয়ে ফেলল, তখন হঠাৎ করেই বাতাস থেমে গেল। নিঃশব্দে সমস্ত ঘর যেন শ্বাস আটকে বসে রইল। কেউ কিছু না বললেও নিশাত স্পষ্ট শুনতে পেল—

 

“আমি তোকে ছাড়বো না…”

 

কণ্ঠটা যেন এক পোড়া কুয়াশা থেকে উঠে আসা ছায়ার মতো। ঠান্ডা, জঞ্জালময়, আর খুবই পরিচিত। কিন্তু নিশাত জানে না, কোথা থেকে।

 

অলস রাতে স্বপ্নের আগুন

 

এরপরের কয়েক রাতে ঘুম নিশাতের শত্রু হয়ে দাঁড়াল। সে দেখতে লাগল এক পোড়া প্রাসাদ, আগুনের আঁচে ঝলসে যাওয়া দেয়াল, আর তারই মতো দেখতে এক নারী দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। পোড়া মুখ, তবু চোখে অদ্ভুত চুম্বক। নারীটি চিৎকার করে বলছে—

 

“ফিরে আয়। এই শরীর আমার। আমি ফিরব তোর ছায়ায়…”

 

নিশাত বুঝতে পারে, তার মধ্যে কেউ ফিরে আসছে। কারো অতীত, যেটা তার নিজের নয়—কিন্তু রক্তের ভেতর লিখে রাখা।

 

ধোঁয়াশার বন্ধু, বাস্তবের ছায়া

 

তার বন্ধু শাওন, যার কাছে সে সব খুলে বলে, প্রথমে বিশ্বাস করে না। ভাবে মানসিক চাপ। সে নিশাতকে বোঝাতে চায়, সব হ্যালুসিনেশন। কিন্তু একদিন তারা নিশাতের বাড়ির পুরনো লাইব্রেরি ঘরে একটা বই খুঁজে পায়—ধুলোমাখা, কালো মলাট, যার গায়ে সেই একই চিহ্ন—স্বপ্নে দেখা পোড়া প্রাসাদের দরজায় থাকা প্রতীক।

 

বইটা খুলতেই এক অলৌকিক দৃশ্য—পাতার ভেতর হঠাৎ করে ভেসে ওঠে নিশাত আর শাওনের ছবি, যেন কেউ আঁকছে ওদের ভবিষ্যৎ। পাতার নিচে লেখা ছন্দ:

 

“ছায়া শুধু রাত নয়, ইতিহাসের পাতায় ঘুমায়,

যার ডাকে আগুন জ্বলে, সে ফিরে আসে পুনরায়।

জল যেথায় ছায়া খায়, গাছের গায়ে লেখা ছায়া,

চিহ্ন খুঁজে ছন্দ পড়ো, ফিরে যাবে শুরু হায়া...”

 

রহস্যের গাছ, পূর্বজন্মের ছায়া

 

ছন্দ অনুযায়ী তারা চলে যায় নদীর ধারে, একটা ছোট জঙ্গলে। সেখানে খুঁজে পায় একটি অদ্ভুত গাছ—যার গায়ে খোদাই করা সেই পুরনো চিহ্ন। পাশে পাথরের উপর লেখা:

 

“পিছনে তাকাস না, ছায়া তখনই জাগে,

প্রতিটি ধাপে অতীত ফিরে আসে, রক্তে লেখা ভাগ্যে...”

 

এইখানে এসে নিশাতের স্মৃতি ধীরে ধীরে খুলে যেতে শুরু করে। সে দেখে আগুনে পোড়া সেই নারী সে নিজেই—তার এক পূর্বজন্ম, যেখানে সে ছিলো অন্ধকারের চুক্তিতে জড়ানো এক আত্মা। কোনো এক কালো মন্ত্রের ফাঁদে পড়ে মৃত্যুর পর তার আত্মা পিশাচ হয়ে গিয়েছিল। তার মৃত্যুর পরে সেই আত্মা শতাব্দী ধরে খুঁজে ফিরেছে পুনর্জন্মের শরীর। এবার নিশাতই সেই বাহন।

 

শেষ মুহূর্তে ছন্দের প্রতিবাদ

 

কিন্তু নিশাত নিজেকে সমর্পণ করে না। সে বুঝে যায়, নিজের আত্মাকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় — ছায়ার ছন্দ ভাঙা। সে বইয়ে থাকা শেষ ছন্দ উচ্চারণ করে:

 

“আত্মা যার পাপমুক্ত নয়, তার ছায়া ছুঁয়ো না,

চিহ্ন ভেঙে রক্ত দাও, আগুনে দাহ করো ছায়া।”

 

নিশাত নিজের রক্ত দিয়ে চিহ্নটা ধুয়ে দেয়। বাতাস থেমে যায়। একটা তীব্র আর্তনাদ শোনা যায় গাছের গায়ে। মুহূর্তে ছায়া মিলিয়ে যায়, বই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

 

নতুন সকাল, পুরনো ছায়া?

 

সবকিছু যেন স্বাভাবিক। নিশাত আবার ঘুমোতে পারে, হাসে, কথা বলে। কিন্তু, গল্প এখানেই কি শেষ?

 

শেষ দৃশ্য—নিশাত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। হঠাৎ আয়নায় তার চোখের পেছনে ভেসে ওঠে সেই পোড়া নারীর ছায়া। এক পলকের জন্য। তারপর মিলিয়ে যায়।

 

নিশাত ধীরে বলে—

 

“তুই তোকে ছাড়বি না... আমি জানি... কিন্তু আমিও আর আগের আমি না...”

চলবে,,,,

বি.দ্র: এই গল্প একটি বৃহৎ সিরিজের নাটকের স্ক্রিপ্ট আকারে লিখা হয়েছে মোট৪৩ টি পর্ব আছে

যদি কোন ডিরেক্টরের এই গল্পটি ভালো লাগে তাহলে অল্প মূল্যে দেওয়া হবে 

যোগাযোগ করুন হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার 

01642264350

Commenti

A product of ASIA BUSINESS SMART PRIVATE LIMITED

Powered by ABS ( P ) Ltd